বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ রিয়াজুলের দুই সন্তানের দায়িত্ব নিলেন শিক্ষক তাবাস্সুম হোসেন রুবী
শহীদ রিয়াজুল তালুকদারের দুই শিশুসন্তানের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এলেন কেরানীগঞ্জের মনোহরিয়া গ্রামের সাবেক স্কুল শিক্ষক তাবাস্সুম হোসেন রুবী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামে শহীদ হওয়া রিয়াজুলের পরিবার এখন তারই সহানুভূতি ও সহায়তার মধ্যে নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে।
২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে শহীদ রিয়াজুল তালুকদারের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হওয়ার খবর পড়ে উদ্বুদ্ধ হন তাবাস্সুম হোসেন রুবী। তিনি জানান, “শহীদদের পরিবারদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যদি আমরা তাদের পাশে না দাঁড়াই, তবে দেশের ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যারা জীবন দিয়েছে, তাদের জন্য আমাদের সহানুভূতি এবং সহায়তা অঙ্গীকার হওয়া উচিত।”
শহীদ রিয়াজুলের দুই সন্তান মেহজাবিন (৫) ও মুস্তাকিম (৩) বাবার মৃত্যুর পর একদম অসহায় অবস্থায় পড়েছে, কারণ তাদের মা তাদের ছেড়ে চলে গেছেন বাবার মৃত্যুর তিন মাস আগে। তবুও, তাবাস্সুম হোসেন রুবী তাদের ভালোর জন্য নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং তাদের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যত গড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
গতকাল সোমবার আমার দেশ পত্রিকার কার্যালয়ে সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা পত্র স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে রিয়াজুলের দুই সন্তানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তাবাস্সুম রুবী প্রস্তুত হয়েছেন।
এ সময়, তাবাস্সুম হোসেন রুবী আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, “এমন একটি উদ্যোগ নেয়া আমার জন্য এক মহান কর্তব্য মনে হচ্ছে। এই কাজের মাধ্যমে আমি মনে করি, সমাজে সাম্যের বাণী আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।”
এছাড়াও, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রুবীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই দেশ যদি সত্যিই একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত সমাজ হতে চায়, তবে আমাদের প্রতিটি শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
আমার দেশ পত্রিকার ফিচার রাইটার সাইফুল ইসলাম ফারহান এই প্রকল্পের তদারকি করবেন এবং প্রতি তিন মাস পর মিটিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে, আর্থিক সহায়তা যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা।
এই আবেগপূর্ণ মূহুর্তে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম, রুবীর বোন তাসনিম হোসেন রিটা, রিয়াজুলের ভাই রাসেল তালুকদার এবং তার মা মেহজাবিন মুস্তাকিম।