যশোরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির মাঠে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের আভাস মিলছে। ঐতিহ্যগতভাবে এই জেলার নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দীর্ঘদিন ধরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান ছিল দৃঢ়। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের তৎপরতা দৃশ্যমানভাবে হ্রাস পাওয়ায় এবার মূল লড়াই হতে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে।
বিএনপির জেলা পর্যায়ে নেতাদের মধ্যে কিছুটা অন্তর্কোন্দল থাকলেও, দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে—প্রার্থী চূড়ান্ত হলে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবেন। তবে গত ৫ আগস্টের পর কিছু নেতাকর্মীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দলীয় সূত্র বলছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তার নেতিবাচক প্রভাব পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা কঠিন। এই পরিস্থিতিকে নিজেদের জন্য সুযোগ হিসেবে দেখছে জামায়াত, যারা অনেক আসনে আড়ালে আড়ালে সাংগঠনিকভাবে শক্তি সঞ্চয় করছে।
তবে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকের স্থানীয়ভাবে পরিচিতি কম ও গণসংযোগ তুলনামূলকভাবে দুর্বল—এটি বিএনপির জন্য কিছুটা স্বস্তির জায়গা বলে মনে করছে দলটি।
অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যশোরে সংগঠনিকভাবে সক্রিয় থাকলেও নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে করছেন না স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংগঠন গোছাতে তৎপর, যদিও এখনও নির্বাচনী মাঠে দৃশ্যমান প্রভাব রাখতে পারেনি। এক সময়ের প্রভাবশালী জাতীয় পার্টি ও বামপন্থী দলগুলো বর্তমানে এলাকায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব হারিয়েছে।
এদিকে জামায়াত ছয়টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে এবং সক্রিয়ভাবে প্রচারে নেমেছে। অন্যদিকে বিএনপি এসব আসনে প্রায় ২০ নেতাকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা করছে। সবমিলিয়ে যশোরের ছয়টি আসনেই বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্থানীয় ভোটাররা।